বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০১৫

ম্যাঙ্গো ট্যুরে চাপাই নবাবগঞ্জ

এক বন্ধু বলল, ম্যাঙ্গো ট্যুরে যাবে নাকি? আমি রাজি হয়ে গেলাম। কাকরাইল থেকে খুব ভোরে যাত্রা শুরু হল। শুক্রবার হলেও জ্যাম ঠেলতে ঠেলতে চাপাই নবাবগঞ্জের দিকে আমাদের গাড়ি ছুটে চল্ল। পথে জুমার নামাজের কিছুক্ষণ বিরতি। তারপর নাটোর উত্তরা গণভবন, রাণীভবানীর রাজবাড়ি। সেখান থেকে পদ্মার পাড়ে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, সারদা পুলিশ একাডেমী দেখলাম। রাতে রাজশাহী অবস্থান। পরদিন ভোরে পদ্মার পাড় ধরে চলে যাওয়া হাইওয়ে দিয়ে চাপাই চল্লাম। রাস্তার দুপাশে যতদূর চোখ যায় শুধু আমের বাগানআমগুলো এমনভাবে ঝুলে আছে যেন মাটিতে শুয়ে আম পাড়া যাবে। অথচ ছোট-বড় কেউ আম পাড়ে না! এখানকার লোকজন এত ভদ্র! পরে জানতে পারলাম, আম বিষয়ে এখানে আইনকানুন ভীষণ কড়া। অনুমতি ছাড়া আম পাড়লে সেটা খুনোখুনি পর্যায়ে চলে যায়। তবে তলায় পড়া আমের কোন মালিকানা নেই, যে পাবে সেটা তার। আমের এত প্রাচুর্য কানসাট বাজারে
মাইল রাস্তার দুপাশে হরেক পদের আম। গোপালভোগ, হিমসাগর, ক্ষিরসাপাত, নেংড়া, আম্রপলি, আশ্বিনা, ফজলি, কাজিপসন্দ, রানীপছন্দ, গোলাপমুখী ইত্যাদি ঝুড়ি ভর্তি আমের সমাহার। তিনমাস ধরে এখানে এই জমজমাট ব্যবসা চলবে। আমরা সোনা মসদিজ স্থলবন্দরের দিকে এগিয়ে আর আমস্রোত দেখছি। স্থানীয়রা সকালে আম আর গরম গরম কালাই রুটি দিয়ে নাস্তা করে। স্থল বন্দরে ভারতের অংশে প্রাচীন গৌড়ের রাজধানী প্রবেশ গেট দেখলাম। সুলতানি আমলের দরসবাড়ি মাদ্রাসা, শাহ নেয়াতুল্লাহর সমাধী, তোহাখানা, শাহ সুজা মসজিদ, গোরস্থান এবং ছোট সোনা মসজিদ
দেখে শনিবার রাতে ঢাকা ফিরে আসলাম। এই ভ্রমনে আমাদের সাথে একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন, সারাপথ তিনি স্থানগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। আম খাওয়া আর আমযজ্ঞের সাথে এই ইতিহাস ধারা বর্ণনা আমাদের খুবই আনন্দ দিয়েছে।





                                শাহ সুজার কীর্তি, তোহাখানা, মসজিদ ও সমাধি কমপ্লেক্স

1 টি মন্তব্য: